স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের বিকল্প নেই

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ৭ আগস্ট ২০২৩ (সোমবার) ঢাকা:
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) আরও অধিকতর শক্তিশালী করতে হবে। এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী আসন্ন জাতীয় সংসদ  অধিবেশনে উত্থাপন এবং অনুমোদনের দাবি জানিয়েছে বক্তারা।
গতকাল রবিবার (০৬ আগস্ট, ২০২৩) রাতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত তামাক ও অসংক্রামক রোগ: তরুণ প্রজন্মের সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা শীর্ষক সেমিনারে এই দাবি জানানো হয়।
সেমিনারের প্রধান অতিথি গ্লোবাল হেলথ এডভোকেসি ইনকিউবেটর (ইউএসএ) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট বন্দনা সাহ বলেন, বিশ্বে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারজনিত কারণে প্রতিবছর প্রায় ১.৮ মিলিয়ন মানুষ মারা যান। তামাকের এই ক্ষতিকর দিক থেকে বিশ্ববাসীকে বাঁচাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এফসিটিসি প্রণয়ন করেছে। বাংলাদেশ এটির অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ। তারপরও বাংলাদেশের বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটিতে কিছু দুর্বলতা লক্ষ্য করা গেছে। সেগুলোকে এড্রেস করে আইনটি সংশোধন করা প্রয়োজন। এতে বাংলাদেশে তামাকের ব্যবহার কমে আসবে।
সেমিনারে বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, আমাদের দেশে ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। আর তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে প্রতিবছর প্রায় ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তাই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রণীত সংশোধনীটি আসন্ন সংসদ অধিবেশনে উত্থাপন এবং সংসদ সদস্যদের ভোটে পাশ করে চূড়ান্ত করা হলে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতাগুলো দূর হবে।
সেমিনারে অন্য বক্তারা বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) যুগোপযোগী করে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উন্নীত করতে ছয়টি বিষয় অন্তর্ভূক্ত করার সুপারিশ করেন। সেগুলো হলো, আইনের ধারা ৪ ও ৭ বিলুপ্ত করা, অর্থাৎ সকল পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করা: তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রর্দশন নিষিদ্ধ করা: তামাক কোম্পানির যে কোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা: তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০% থেকে বাড়িয়ে ৯০% করা: বিড়ি সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা এবং ই সিগারেটসহ সকল ইমার্জিং ট্যোব্যাকো প্রোডাক্টস্ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল (রিজভী) এর সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী এবং সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদের উপদেষ্টা ডা. মোশাররফ হোসেন মুক্ত। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সন্ধানী ঢাকা মেডিকেল কলেজ ইউনিটের অর্থ সম্পাদক নাঈম হাসান অতুল এবং সন্ধানী শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক তাইয়্যেবাহ্ বিনতে রফিক রীম।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু, হৃদরোগ বিষেশজ্ঞ ও সন্ধানী চক্ষুদান সমিতির সদস্য অধ্যাপক ডা. দীপল কৃষ্ণ অধিকারী, সন্ধানীর বিভিন্ন ইউনিটের তরুণ চিকিৎসকসহ আরও অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*