মোহাম্মদ সোহেল রানা খান:
“দিন যায় কথা থাকে ” সুবির নন্দী কন্ঠে বিখ্যাত এই গানের শুরে শুর মিলিয়ে বলা যায় প্রশাসনেও একজন যায়,একজন আসে । কিন্তু ব্যতিক্রম হিসাবে থেকে যায় তার কর্মকান্ড। তেমনই একজন কর্মচঞ্চল ও জনবান্ধব কর্মকর্তা হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইবাদত হোসেন।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার এই উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) ইবাদত হোসেন যোগদান করার পরই পাল্টে যায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চিত্র। তার কাছে গিয়ে নিরুপায় হয়ে ফিরে এসেছেন এমন অভিযোগ কারী কুষ্টিয়া সদরে বিরল।
সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে জনগণের অভাব ও অভিযোগই কেবল শোনা যায় নিত্য। তবে তাদের মাঝে বতিক্রমও পাওয়া যায় কাউকে কাউকে। যারা নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে জনগণের আস্থারস্থল ও প্রিয় মানুষ হয়ে ওঠেন। হয়রানি থেকে মুক্তি দেন মানুষকে, নিজের সরকারি দপ্তরকে করে তোলেন জনবান্ধব। তেমনই একজন কর্মকর্তা কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা ইবাদত হোসেন।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার এই উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) ইবাদত হোসেন মাত্র ১ বছর ২ মাসের মধ্যেই এখানে সবার কাছে প্রিয় কর্মকর্তা হয়ে উঠেছেন।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা ইবাদত হোসেন তার মেধা ও কর্ম দক্ষতা দিয়ে কাজ করে ইতিমধ্যে তিনি জনবান্ধব কর্মকর্তা হিসেবে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন।
উপজেলার বিভিন্ন অফিস থেকে অনিয়ম দূর্নীতি প্রতিরোধ করে মডেল উপজেলায় রুপান্তরিত করতে নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছেন। ২০১৬ সালের অক্টোবরে সে যোগদানের পর উপজেলার অফিসের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে গতিশীল হয়েছে কাজ, দুর হয়েছে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি ও ভোগান্তি।
ইবাদত হোসেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে যোগদান করে বিভিন্ন সময়োপযোগী কার্যক্রমের ফলে পাল্টে গেছে উপজেলার সার্বিক চিত্র।
উপজেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতে নজর রাখা, প্রতিটি অফিসে সেবার মান বৃদ্ধি এবং ভোগান্তি কমানো, প্রকৃত কৃষকের মাঝে উপকরন বিতরন, বৃক্ষরোপণ অভিযান, প্রকৃত হতদরিদ্রের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়া, ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা, বাল্যবিবাহ বন্ধ, হাট বাজারগুলো আধুনিক করা, স্থানীয় সরকার বিভাগের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বজায় রাখা, প্রকৃত ভূমিহীনদের মাঝে খাস জমি বন্টন, ভিক্ষুকমুক্ত,গৃহহীন দের ঘর নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহনসহ প্রভূতি কাজের জন্য পাল্টে গেছে পুরো উপজেলার চিত্র।
বিশেষ করে বাল্য বিবাহ বন্ধ ও মাদক প্রতিরোধে তাঁর ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইবাদত হোসেন গত এক বছরে প্রায় অর্ধশত বাল্য বিবাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা কর্মচারীরা জানায়, গরিব মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য গরু, ছাগল ও সেলাইমেশিন কেনার অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঠিকাদার রোগা ও কম দামের গরু ছাগল কিনে আনেন।দূর্নীতির বিরুদ্ধে ইউএনও এর শক্ত অবস্থানের কারনে তা বিতরন করা হয় নি। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ যার জন্য ইউএনওর প্রশংসা করেছেন।
অসহায় ও দুস্থ নারীদের কর্মস্থানের জন্য ভূমিকা রেখেছেন ইউএনও। উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের সামনে উপজেলার অসহায় ও দুস্থ নারীদের নিরাপদ কর্মস্থানের জন্য ইউএনও এর প্রচেষ্টায় এবং জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনায় স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় একটি নারী মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল কার্যক্রমের মাধ্যমে শতভাগ ভর্তি, নিয়মিত উপস্থিতি, ঝরে পড়া রোধ ও মান সম্মত শিক্ষা নিশ্চত করার লক্ষ্যে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন ইউএনও ইবাদত হোসেন।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা ভিক্ষুক মুক্তকরন, ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থান ও পূনর্বাসন সংস্থার জন্য নেওয়া টাকা খরচের ব্যাপারে স্বচ্ছতার স্বাক্ষর রেখেছে ইউএনও। নেওয়া সকল অর্থ সংস্থার ব্যাংক হিসাবে জমা প্রদান করা হয়েছে।
সমন্বিত উন্নয়ন উদ্যোগ, এর আওতায় কার্যকরী ও সমন্বিত উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, এর নেতৃত্বে ৪টি দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশু ও ১৫ বছরের অধিক বয়সী কিশোরী, মহিলাদের টিকা দান, প্রাথমিক শিক্ষা ও স্যানিটেশন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, জমির পরিমান, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর ভাতা, বিদ্যুৎ, শিশু পুষ্টি ইত্যাদি বিষয়ে সরেজমিন তথ্য সংগ্রহ ও তাৎক্ষনিক সেবা প্রদান করেছে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কয়েকজন সচেতন মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, ইউএনও ইবাদত হোসেনের ফলেই উপজেলার অফিসগুলোতে অনিয়ম দুর্নীতি ও ভোগান্তি কমেছে এবং প্রতিটি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইবাদত হোসেন জানায়, আমি প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছি, যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি আমার উপর সরকারের অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার। মানুষ তার কর্মের মধ্যে দিয়ে চিরজীবন বেঁচে থাকে, আমিও আমার কর্ম দিয়ে মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই। সকল কাজে কুষ্টিয়াবাসীর সহযোগিতা ও সমর্থন ছিল আমার মূল প্রেরণা।
উল্লেখ্য, গত ১৪ই ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কুষ্টিয়া সদর, যশোরের চৌগাছা উপজেলায় ইউএনও হিসেবে বদলি হয়েছে।
