সরকা‌রি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ছে: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

প্র‌তি‌দিন বাংলা‌দেশ, ঢাকা: 
দ্রুতই সরকা‌রি চাকরিতে প্র‌বে‌শের বয়স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে বলে জানিয়েছেন সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত হন সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত জনপ্রশাসন প্র‌তিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহম্মেদসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
মেহেরপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন সোমবার বিকেলে বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শপথ নেন।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে কী পদক্ষেপ নতুন সরকার নেবে, তা জানতে চান একজন সাংবাদিক। উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেহেতু ঘোষণা দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব এটা হবে। যখন এটা ঘোষণা করা হয়েছে এর মানে অনেক চিন্তা ভাবনা, পরিকল্পনা করেই ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেন সেটা করেন। আমরা চাইব খুব দ্রুত এটা হয়ে যাবে।
নিয়োগ পাওয়ার পর প্রথমদিন অফিসে বসেই জনগণকে আশ্বস্ত করে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, আপনারা অবশ্যই ভাল কিছু দেখবেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বির্নিমাণে এই প্রশাসন যাতে তাদের সর্বাত্মক অবদান রাখতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী বেশ কিছু দিক নির্দেশনা ইতোমধ্যে রেখেছেন। আমাদের কিছু কর্মপরিকল্পনা আছে সেগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দেবেন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তা বাস্তবায়ন করাটাই হচ্ছে আমার কাজ। কারণ এটার পূর্ণমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নিজেই। রূপকল্প ২০২১ অনুযায়ী বাংলাদেশ হবে তথ্যভিত্তিক একটি দেশ। সেক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। এই মন্ত্রণালয়কে আমরা সেভাবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী গোছাব, সাজাব। আমাদের যা যা প্রয়োজন লজিস্টিক সাপোর্ট তো প্রধানমন্ত্রী দেবেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী চান এই প্রশাসন অত্যন্ত গতিশীল হবে, অত্যন্ত দক্ষ হবে এবং জনবান্ধব হবে। যাতে গ্রামের সাধারণ মানুষ পর্যন্ত জনপ্রশাসনের সেবাগুলো অত্যন্ত সহজ ও সাবলীলভাবে পেতে পারে। সেজন্য আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা আছে, সেটা সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করাই আমাদের কাজ হবে।
দুর্নীতির বিষয়ে অবস্থান কী হবে জানতে চাইলে ফরহাদ হোসেন বলেন, আমাদের কাজের একটা অংশ হচ্ছে যদি আমাদের কাজে কোন অন্তরায় বা বাধা থাকে ত্রুটি থাকে তবে প্রথম কাজ হচ্ছে সেই বাধা ত্রুটি অন্তরায়গুলোকে দূর করা। আশা করি সাংবাদিকরা ত্রুটিগুলো তুলে ধরলে আমরা অবশ্যই দ্রুত পদক্ষেপের ভিত্তিতে সমাধান করতে পারব।
তিনি বলেন, মানুষের তো ভুলত্রুটি কিছু থাকে। এখন অনেক স্মার্ট অফিসার আছেন। ভাল ব্যুরোক্রেসি (আমলাতন্ত্র) ছাড়া তো ভাল উন্নত দেশ সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী সুনিপুণভাবে চিন্তা করছেন যাতে আমরা ভাল ও দক্ষ প্রশাসন গড়ে তুলতে পারি। তিনি বলেন, অবশ্যই আপনারা ভাল কিছু দেখবেন। এবারের যে সময়টিতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পূরণ হবে, সেই সময়ে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূরণ হবে। সবকিছু মিলিয়ে একটা বড় রকমের পরিবর্তন আপনারা দেখবেন ইনশাআল্লহ। সেক্ষেত্রে প্রশাসন অবশ্যই এগিয়ে থাকবে।
২৭টি ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আপনি। এখানে প্রশাসন ক্যাডার সুপার পাওয়ার ভোগ করে। অন্যান্য ক্যাডারের অফিসারদের বৈষম্যের অভিযোগ আছে। বিষয়টি সম্পর্কে আপনি অবগত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি দশম সংসদের একজন সংসদ সদস্য ছিলাম। আমার এলাকা থেকে যারা ক্যাডার সার্ভিসে আছেন তারা আমার কাছেও অভিযোগ অনুযোগ করেছিলেন যে, আমি যাতে এ বিষয়ে সংসদে অবদান রাখি। সেক্ষেত্রে বিষয়গুলো নিয়ে আমিও অবহিত আছি। প্রধানমন্ত্রীও কিন্তু অনেক সলিউশন ইতোমধ্যে দিয়েছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যেগুলো বাকি আছে আগামীতে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করে একটা সমতা ও সকলের মধ্যে যাতে একটা সুসম্পর্ক থাকে সেই বিষয়টি আমরা অবশ্যই দেখব। আপনি কী মনে করেন মন্ত্রীদের সম্পদের হিসাব প্রকাশ করা উচিত, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই, কারণ গণতন্ত্রে জবাবদিহিতার একটা ব্যাপার আছে। সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের তো জবাবদিহিতার মধ্যে থাকতেই হবে।
সম্পদের হিসাব প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আপনারা ভূমিকা কী হবে, এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ধারণা একাদশ জাতীয় সংসদ এ ব্যাপারে ভাল পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। এবার আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে যেতে চাচ্ছি। সেক্ষেত্রে আমি বলি গণতন্ত্রের ভিতকে মজবুত করতে চাই, দুর্নীতি দমনের কোন বিকল্প নেই। ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন অত্যন্ত শক্তিশালী হয়েছে, আগামীতে আরও শক্তিশালী হবে। সেক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একটি ভাল দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সরকারী চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি রয়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেহেতু ঘোষণা দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব এটা হবে। যখন এটা ঘোষণা করা হয়েছে এর মানে অনেক চিন্তা ভাবনা সুপরিকল্পনা করেই ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেন সেটা করেন। আমরা চাইব খুব দ্রুত এটা হয়ে যাক। প্রশাসন নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়কে কতটা শক্তভাবে আপনি সামলাতে পারবেন জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার মাথার ওপর আছেন প্রধানমন্ত্রী। আশা করি তার সহযোগিতায় সব বিষয়ই আমরা সুন্দরভাবে দেখতে পারব। এখানে কোন সমস্যা হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*