ঢাকা, ১৩ ডিসেম্বর, প্রতিদিন বাংলাদেশ :
বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পাশাপাশি শহুরে অবকাঠামো, জ্বালানি ও সমুদ্র অর্থনীতি খাতে বিনিয়োগের জন্য ফরাসি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪৫তম বার্ষিকী পালিত হচ্ছে এবার। সহযোগিতার নতুন সম্ভাব্য নতুন ক্ষেত্র তৈরিতে এটা একটা বড় সুযোগ বলে আমি মনে করি।
আজ বুধবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে দেশটির ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এমইডিইএফ ইন্টারন্যাশনালের নেতাদের সঙ্গে আয়োজিক এক সভায় এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির কথা তুলে ধরে এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ অপার সুযোগ ও সম্ভাবনার দেশ; এই অঞ্চলে সবচেয়ে বিনিয়োগবান্ধব দেশও। দুই দেশের মধ্যে গতানুগতিক ক্ষেত্র ছাড়াও শহুরে অবকাঠামো, জ্বালানি ও সমুদ্র অর্থনীতি খাতে আরও ফরাসি বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে বলে আমি মনে করি। এসব ক্ষেত্রে আমাদের প্রচেষ্টায় সহায়তা পেতে ফরাসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশে ফ্রান্সের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এককোটি ৪৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। কাজেই নিশ্চিতভাবেই ফান্সের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আরও ক্ষেত্র রয়েছে।
সহজ শর্তে অর্থায়নসহ আরও বিনিয়োগ নিয়ে আসার ফরাসি কোম্পানিগুলোর প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনাদের উদ্দেশ্যে আমার সহজ বার্তা হলো- প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ফ্রান্সকে বিনিয়োগ করতে হবে যেখানে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বাংলাদেশেরও বিনিয়োগ লাগবে। আপনাদের দরকার প্রতিযোগিতাসক্ষম দামে পণ্য কেনা, আমাদের দরকার রপ্তানির বাজার বাড়ানো। দুই দেশের জন্য লাভবান হওয়ার ভারসাম্যপূর্ণ সুযোগ এটা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধিতে সন্তুষ্টির কথা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
ফরাসি ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এমইডিইএফের প্রতিনিধি দলের শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে। ওই সফর দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আরও অবদান রাখবে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
প্রসঙ্গত, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে জলবায়ু বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে সোমবার প্যারিসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সোমবার প্যারিসে পৌঁছানোর পর প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সকালে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। দুপুরে ফরাসি প্রেসিডেন্টের দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন এবং বিকালে ‘ওয়ান প্ল্যানেট সামিটে’ যোগ দেন। বুধবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সভার পর রওনা হয়ে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।